এখন মমতা ব্যানার্জির পছন্দের পাঁচ সাংবাদিক, যাদের দিদি বড় পুরস্কার দিতে চান
মমতা ব্যানার্জির রাজনৈতিক জীবনে সাংবাদিকদের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। মমতার স্ট্রাগল পিরিয়ড, উত্থান-পতন সবই নাটকীয় কায়দায় সাংবাদিকদের মাধ্যমেই গোটা দেশ, গোটা রাজ্য দেখেছে,শুনেছে, পড়েছে। সাংবাদিকদের বরাবরই গুরত্ব দেন মমতা। নানা সময়ে মমতা বিভিন্ন সাংবাদিকদের নিজের কাছে টেনে নিয়েছেন। বরুণ সেনগুপ্তকে ভক্তি করতেন খুব। আবার কুণাল ঘোষকে কাছে টেনে দিয়েছিলেন ক্ষমতা। কিন্তু কুণাল কাণ্ডের পর মমতা এখন সাংবাদিকদের নিজের বৃত্তে ঠাঁই দিতে একটু সতর্ক। তবু এর মাঝেই এখন মমতা খুব পছন্দ করেন যে সব সাংবাদিকদের–
৫) সুমন চট্টোপাধ্যায় (এই সময় পত্রিকার সম্পাদক)
বাংলার অন্যতম সেরা সাংবাদিক। শুধু সাংবাদিক জীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। বড় মিডিয়া হাউসের পত্রিকা, চ্যানেলের দায়িত্ব সামলানো নয়, সুমন চট্টোপাধ্যায় তাঁর লেখা-কথা- বাচনভঙ্গির মাধ্যমে বাংলার মন জিতেছেন। নানা সময় বিতর্কেও জড়িয়েছেন। তবে সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে কথা হবে না। দিদির খুব পছন্দের সাংবাদিক সুমন। তবে সমালোচনা করে লিখলেও সুমনের ওপর রেগেও যেতেন। সুমন এখন তাঁর পত্রিকার সম্পাদকীয়তে তেড়ে গাল পারেন (অবশ্যই তার নিজস্ব ভঙ্গিতে) মোদীকে গাল পড়েন। সে সব কথা কানে যায় মমতার। মোদী বিরোধী সুমনকে তাই আরও কাছে টেনে নিতে চান দিদি। সুমন আগামী দিনে বড় পুরস্কার দিলে অবাক হওয়ার থাকবে না।
৪) বিশ্ব মজুমদার ( নিউজ 18 চ্যানেলের এডিটর)
অনেকে বলেন কুণাল ঘোষের খেলে যাওয়া আসনটা নিতে পারেন বিশ্ব মজুমদার। সেভাবে কলকাতা মিডিয়া দারুণভাবে পা জমাতে না পারলেও দিদির বিশ্বে তিনি দারুণভাবে আছেন। শোনা যাচ্ছিল এবারের রাজ্যসভা নির্বাচনেই বিশ্বকে প্রার্থী করবেন বলে ঠিক করে ফেলেছিলেন। কিন্তু কুণাল ঘোষের স্মৃতি এখনও টাটকা তৃণমূলে। তাই বিশ্বকে আরও একটু দেখে নেওয়ার পর সাংসদ করার পক্ষেই দিদিকে পরমার্শ দিয়েছিলেন তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা। আর তাই বিশ্বকে এবার প্রার্থী করেনি তৃণমূল। অবশ্য বিশ্ব যেভাবে শুধু দিদি, দিদি আউড়ে যান তাতে তিনি যে কোনও দিন পুরস্কার পেয়ে যেতে পারেন।
৩) অনির্বান চৌধুরী (২৪ ঘণ্টা চ্যানেলের এডিটর)
হিন্দুস্থান টাইমস থেকে ক বছর আগে জি নিউজ গ্রুপের বাংলা নিউজ চ্যানেল ২৪ ঘণ্টার দায়িত্ব নিয়েছেন অনির্বান চৌধুরী। বাকি সাংবাদিকদের মত দিদি, দিদি করে পিছনে ঘোরেন না। তবু অনির্বানের গুণ, ব্যবহার, বাচনভঙ্গির জন্য তাঁকে পছন্দ করেন মমতা। ভ্যাটিকান সিটিই হোক বা দার্জিলিং। মমতা নিজে অনির্বানকে তাঁর সব সফরে নিয়ে যান। অনির্বানের বাবা বিখ্যাত লেখক অমিতাভ চৌধুরীর ভক্ত মমতা। এক সময় সিপিএমের মুখপত্র হিসেবে কাজ করা ২৪ ঘণ্টা চ্যানেলকে মমতা বয়কট করলেও অনির্বান এই চ্যানেলে যোগ দেওয়ার পর বরফ গলে। অনির্বানের অনুরোধে দিদি লাইভ ইন্টারভিউ দেন ২৪ ঘণ্টা চ্যানেলকে। অনির্বানকে বড় পুরস্কার দেওয়াটা সময়ের অপেক্ষা।
২) রজত রায় চৌধুরী ( বাংলা টাইম চ্যানেলের অ্যাঙ্কর-সাংবাদিক)
খাস খবর থেকেই রজতের প্রশংসা করেন মমতা। NE বাংলায় কর্মরত অবস্থায় মমতার খুব কাছাকাছি আসেন রজত। এখন একেবারে তৃণমূলের চ্যানেল হিসেবে কাজ করা বাংলা টাইম-এর শীর্ষপদে আছেন রজত রায় চৌধুরী। দিদির বেশ কিছু সভায় রজতকে অ্যাঙ্করের ভূমিকায় দেখা যায়। সেই রজতকে বড় পুরস্কার দিতে পারেন মমতা।
১) রাজদীপ সারদেশাই ( ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপের এডিটর)
দেশের অন্যতম সেরা সাংবাদিক। টিভি সাংবাদিকতার একেবারে প্রথম যুগের মুখ রাজদীপ এখনও দেশের প্রাইম টাইম নিউজ শোয়ের অ্যাঙ্কর। একেবারে নরেন্দ্র মোদী বিরোধী সাংবাদিক। মোদী তাঁকে প্রকাশ্যে অপমান করেছিলেন। ২০০১ গুজরাট দাঙ্গার গ্রাউন্ড জিরো রিপোর্ট করে তত্॥কালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদীকে খুব বিপাকে ফেলেছিলেন রাজদীপ। সেই রাজদীপকে এর আগে বহুবার তৃণমূলে যোগ দিতে আবেদন করেছিলেন মমতা। দিল্লি গেলে রাজদীপের সঙ্গে মমতার সাক্ষাত আগে হতই। অবশ্য দিদির প্রস্তাবে কখনও সাড়া দেননি রাজদীপ। দিন যত যাচ্ছে রাজদীপের সঙ্গে মোদীর সম্পর্ক তত খারাপ হচ্ছে। সাংবাদিক গৌরি লঙ্কেশের মৃত্যুর পর মোদীর বিরুদ্ধে মিছিলও করেছিলেন রাজদীপ। দিল্লিতে ক্ষমতা পেলে রাজদীপকে পুরস্কার দেবেনই মমতা।